লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা, সহকারী প্রকৌশলী (পুরঃ) পদে নিয়োগ, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড

আমাকে পরীক্ষায় কি আসবে, পরীক্ষা কবে নাগাদ হবে, মার্কস্‌ ডিস্ট্রিবিউশান কি হবে, সে সংক্রান্ত বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছিলো। আমার জানা তথ্যাদি আমি পৃথকভাবে না জানিয়ে এখানে সন্নিবেশিত করলাম।

পরীক্ষা পদ্ধতিঃ

বাপাউবো-এর লিখিত পরীক্ষা স্বাধীনতার পর ৭০-এর দশক থেকেই বুয়েট কর্তৃক পরিচালিত হয়ে আসছে। বুয়েট কর্তৃক যে সকল সরকারী সংস্থার লিখিত পরীক্ষা পরিচালনা হয়ে থাকে, সে সকল পরীক্ষা অনেকটা একই ধাচের হয়। বুয়েট সাধারণত WASA, GTCL, DESCO, DPDC, NWPGCL, Titash GAS, DNCC, DSCC, BWDB ইত্যাদি সরকারী সংস্থার লিখিত পরীক্ষা পরিচালনা করে থাকে। তন্মধ্যে পাউবোতেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রকৌশলী নেওয়া হয়ে থাকে (প্রতিবারই ৫০ জনের মত/বেশি)। এই পরীক্ষার প্রিপারেশন নিলে উল্লেখিত অন্যান্য সংস্থার লিখিত পরীক্ষার সাথে মিল পাওয়া যায়। কিন্তু, LGED, PWD, RHD, DPHE, Railway ইত্যাদি সরকারী সংস্থার পরীক্ষা PSC (Public Service Commission) কর্তৃক পরিচালিত হয়ে থাকে। যার ফলে বুয়েটে অনুষ্ঠিত পরীক্ষা হতে এসকল সংস্থার পরীক্ষা পদ্ধতি কিছুটা হলেও ভিন্ন। 

পরীক্ষা কবে নাগাদ হতে পারেঃ

বিগত কয়েক বছরের নিয়োগ পরীক্ষার উদাহরণ দিলে দেখা গিয়েছে যে, আবেদন করার সময় শেষ হবার ২-৩ মাসের মধ্যে লিখিত পরীক্ষা বুয়েটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। যদিও আবেদন শেষ হবার পর সঠিক সময় বলা যাবে। এমনও হতে পারে, আবেদন শেষ হবার ১ মাসের মধ্যে পরীক্ষা। বুয়েট কবে পরীক্ষার তারিখ দিবে, সেটার উপর অনেকাংশে নির্ভর করে। রমযান মাসের পরীক্ষা পরতে পারে। দিন শুক্রবার করেই পড়ে সাধারণত। প্রতিবারই নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার একটি চাপ থাকে বিধায় পরীক্ষা দ্রুত নেওয়া হয়। 

এখানে উল্লেখ্য, ৪০তম বিসিএস পরীক্ষার প্রিলি আর পাউবো'র লিখিত পরীক্ষা একত্রে/কাছাকাছি সময়ে হতে পারে। যার ফলে অনেকেই দুই দিকে প্রিপারেশন নিয়ে এগুতে পারে এবং এটা করলে ভুল হবে। কারণ, প্রকৌশল পরীক্ষার জন্য অনেক সময় দিতে হবে। বুয়েট অনেক টপিকের বেসিক হতে প্রশ্ন করবে যার জন্য অনেক সময় দিতে হয়। তাই লক্ষ্য আগেই সেট করে নেওয়াটা জরুরি। এখানে একটি জরুরি বিষয় হলো, লিখিততে পাস মার্কস হলো ৪০, তার মানে এই নয় যে আমি ৪০ পেলেই চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হবো। লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষার সম্মিলিত নম্বর দ্বারাই যাচাই করা হবে কে টিকবে, কে টিকবে না। লিখিত পরীক্ষার ১০০ নম্বরকে ৭০ নম্বরে রূপান্তর করা হয়। অর্থাৎ ৪০ পেলে ৭০ এ আসে ২৮। বাকি ৩০ নম্বর বরাদ্দ মৌখিক পরীক্ষার জন্য। মৌখিক পরীক্ষার ভাগ হলোঃ ৫ নম্বর SSC, ৫ নম্বর HSC, ৫ নম্বর BSC Certificate, ৫ নম্বর কম্পিউটার টাইপিং আর বাকি ১০ নম্বর হলো মূল ভাইভা। তাই সেখানে খুব একটা কম্পিটিশন হয় না। এই দুই ভাগের সম্বিলিত নম্বরই মূল নিয়োগে সহায়তা করবে। তাই বুঝাই যাচ্ছে, লিখিত পরীক্ষায় ভালো করা কতোটা জরুরি। কেবলমাত্র ৪০ পেয়ে লিখিত উত্তীর্ণ হলে চলবে না, লিখিত পরীক্ষায় অবশ্যই ভালো করতে হবে। 

পরীক্ষা সম্পর্কিত তথ্যাদিঃ

এ যাবৎকাল পাউবো'র লিখিত পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার মধ্যে ৮০ নম্বর হলো ইঞ্জিনিয়ারিং, আর ২০ নম্বর হলো সাধারণ জ্ঞান। 

সাধারণ জ্ঞানঃ২০

বাংলাঃ ০৫, ইংরেজিঃ ০৫, কম্পিউটারঃ ০৫, সাধারণ জ্ঞানঃ ০৫। (প্রত্যেকটি টপিকের জন্য ১০টি প্রশ্ন হবে ০.৫ নম্বর করে অর্থাৎ ৪০ টি প্রশ্ন X 0.5 = 20 Marks. 

Engineering: 80

WRE: 30, Others: 50

WRE Part:

সাধারণত ১০ টি প্রশ্নথাকে, ৩ নম্বর করে মোট ৩০ নম্বর। বুয়েট পরীক্ষায় খাতার মধ্যেই প্রশ্ন এবং খাতার মধ্যেই উত্তর লিখার জায়গা থাকে। ছোট জায়গা রাখা হয়, যার মধ্যে সবকিছুর উত্তর দিতে হয়। তাই বুঝা যাচ্ছে যে, বড় অংক/থিওরি সব বাদ দিতে হবে। Fluid mechanics-1 Question, OCF- 3 Questions, Hydrology- 3 Questions, Irrigation- 3 Questions (বিগত বছরগুলোতে সাধারণত এভাবেই প্রশ্ন করা হয়েছে, এ বছর পরিবর্তন হতেও পারে, এভাবেই যে আসবে এমন কোন কথা নেই। কোন পার্টে কমবেশি হতেপারে। Math & Short Theory মিলিয়ে ১০টি প্রশ্ন, সিংহভাগ থাকবে Math)

Engineering: 50

Structure: 12.5, Geotech: 12.5, Transportation: 12.5, Environment: 12.5. 

প্রতি ভাগের ক্ষেত্রে ৩+৩+৪+২.৫=১২.৫ এইরূপ মার্কস ডিস্ট্রিবিউশান করে প্রশ্ন আসতে দেখা গিয়েছে। ২.৫ মার্কস এর জন্য ৫ টা MCQ থাকে ঐ টপিক সম্পর্কিত। ৫X০.৫=২.৫। বাকি ১০ নম্বরে Math & Theory মিলিয়ে প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। 

বুয়েটের প্রশ্ন এবারও একই ধাচের হলে আশা করা যাচ্ছে পাউবোর প্রশ্নপত্র এরকমই হবে। তবে বিগত বছরগুলোতে বুয়েট কি ধরণের প্রশ্ন করেছে, তা পেলে অনেকটা সহায়ক হবে। এতে স্পষ্ট বুঝা যাবে প্রশ্ন পদ্ধতি পরিবর্তন হয়েছে কি না!

ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রথম সহায়ক হলো পলাশীতে এ সময়ের কোন নোটপত্র আছে কিনা। চাকুরী পরীক্ষার জন্য অনেকেই গাইড বই বের করে থাকে। সেটা নিয়ে এমআইএসটি-এর মূল নোট/বইয়ের সাথে মিলিয়ে সামনে আগালে অনেকটা সহায়ক হবে। তাছাড়া ফেসবুকে ২টা গ্রুপ আছে, যেই গ্রুপের আরকাইভে অনেক প্রশ্নপত্র আপলোড করা আছে। সেইসাথে সেখানে প্রতিনিয়ত অনেক পোস্ট থাকে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পর্কিত। সেগুলো অনুসরণ করলে অনেক সহায়তা পাওয়া যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। গ্রুপগুলোর লিংক এখানে শেয়ার করা হলোঃ

https://www.facebook.com/groups/BDGOVT.JOBSFORCE

https://www.facebook.com/groups/bdjobsforcivilengineers

Comments